লেখক গাজী মুনছুর আজিজের নেশা ভ্রমণ। পেশা সাংবাদিকতা। ঘুরে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। ঘুরতে গিয়ে সেখানকার নদীর পানিতে শরীর ভেজানো তার আরেক নেশা। মাঝেমধ্যে বের হন সাইকেল অভিযানে। দেশের বাইরেও যান। লেখালেখি করছেন পাখি-প্রকৃতি, লোকসংস্কৃতি, খাবার, ইতিহাস-ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। তার উল্লেখযোগ্য বই ‘রূপসী বাংলার রূপের খোঁজে’, ‘ভ্রমণের দিন’, ‘ভুটান দার্জিলিং ও অন্যান্য ভ্রমণ’, ‘অনন্য আরব’, ‘পজিটিভ বাংলাদেশ’, ‘ফাদার মারিনো রিগন’, ‘৭১-এর খণ্ডচিত্র’। সম্পাদনা করছেন ‘ঈদ উৎসব’ ম্যাগাজিন। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য হিসেবে পাখি শুমারিসহ বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।
এবং বই : আপনাকে অভিনন্দন। আমরা জানতে পেরেছি একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে আপনার নতুন ভ্রমণগল্প ‘অজানা অজন্তা’?
গাজী মুনছুর আজিজ : জি, এবারের একুশে বইমেলায় আমার নতুন ভ্রমণগল্প ‘অজানা অজন্তা’এসেছে। প্রকাশ করেছে চমনপ্রকাশ। প্রচ্ছদ করেছেন দেওয়ান আতিকুর রহমান। দাম ২৫০ টাকা। চমন প্রকাশের স্টল নম্বর ৫৩৮। এ ছাড়া বইটি পাওয়া যাবে বাতিঘর বাংলামটর (বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র) ও শাহবাগের আজিজ মার্কেট শাখায়। বাতিঘর অনলাইনে যোগাযোগ করেও বইটি কেনা যাবে।
এবং বই : বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন…
গাজী মুনছুর আজিজ : অজন্তার রহস্যময় গুহাগুলো পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ বছর আগে থেকে পাহাড় খোদাই করে গুহাগুলো তৈরি। এসব গুহার ভেতর পাথর কেটে কেটে তৈরি নানা শিল্পকর্ম ও গুহার দেয়ালে আঁকা রঙিন চিত্রকর্ম। যে কেউ রীতিমতো বিষ্মিত হবেন এসব শিল্পকর্ম দেখে। ছোট-বড় ৩০টি গুহা রয়েছে অজন্তায়। গুহাগুলোর মধ্যে কোনোটি চৈত্য বা উপাসনালয়। আবার কোনোটি বিহার। প্রতিটি গুহার শিল্পকর্মে আছে আলাদা বৈচিত্র্য। মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষু বা সন্ন্যাসীরা সংস্কৃতিচর্চা বা ধর্মচর্চা বা উপাসনার জন্য এসব গুহা ও শিল্পকর্ম করেছেন। প্রায় ৯০০ বছর ধরে নির্মাণ করা অজন্তা নবম বা দশম শতাব্দীতে হঠাৎ সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত হয়। এরপর প্রায় হাজার বছর লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিল শিল্পসমৃদ্ধ এসব গুহা। মূলত আমি অজন্তার এসব গুহা ঘুরে ঘুরে যা দেখেছি আর জেনেছি, তা সহজ ভাষায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ‘অজানা অজন্তা’ বইয়ে। তবে অজন্তার শিল্পের যে গভীরতা, সে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করিনি। ভারতের মাহারাষ্ট্র রাজ্যের বাণিজ্যিক শহর আওরঙ্গাবাদ থেকে অজন্তার দূরত্ব প্রায় ১০১ কিলোমিটার।
এবং বই : এর বাইরে নতুন বই কি আরও আসবে?
গাজী মুনছুর আজিজ : আপাতত এ মেলায় নতুন বই আসছে না। তবে মেলার পর শিগগিরই নতুন বই আসবে।
এবং বই : বইমেলাকে সামনে রেখে বই প্রকাশ করা নিয়ে লেখক, প্রকাশকদের একধরনের তাড়াহুড়ো আমরা দেখি। অথচ বছরের বাকী সময়ে বই নিয়ে তেমন তৎপরতা দেখি না। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
গাজী মুনছুর আজিজ : আমার এ বইটিও মেলার অনেক আগে এসেছে। আসলে মেলার আগের বই মানেই আমরা ‘মেলার বই’ হিসেবে ধরে নিই। সেই হিসেবে আমার এ বইও এ মেলার বই। আর মেলার মধ্যে যে বই প্রকাশ হয়, সেটাতো মেলারই বই। মূলত আমরা বাঙালিরা উৎসব-পার্বণকেন্দ্রিক। আর একুশে বইমেলাও আমাদের কাছে প্রাণের উৎসব। আর উৎসব মানেই অনেক মানুষের মেলবন্ধন ও অনেক কেনাবেঁচা। সেজন্যই হয়তো সবাই বইমেলাকেন্দ্রিক নতুন বই প্রকাশ করেন বিক্রি বেশি হওয়ার জন্য। এ ছাড়া বইমেলার মতো এমন একটি উৎসবে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেও লেখক-প্রকাশক বই প্রকাশের সময় হিসেবে মেলাকেই বেছে নেন।
এবং বই : আপনাকে ধন্যবাদ।
গাজী মুনছুর আজিজ : আপনাকেও ধন্যবাদ।